ভারতে টিকা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা

প্রকাশিত: ৩ বছরs পূর্বে

করোনার দৈনিক সংক্রমণ এক লাফে সোয়া লাখ ছাড়িয়ে যেতেই ভারতে শুরু হলো টিকা নিয়ে কেন্দ্র–রাজ্যের রাজনৈতিক তরজা। মহারাষ্ট্র সরকার সরাসরি কেন্দ্রের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ এনে বলেছে, রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় টিকা দেওয়া হচ্ছে না।

জবাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পাঞ্জাবের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলোর ‘অব্যবস্থা, অযোগ্যতা ও অপদার্থতাকে’।

কেন্দ্র–রাজ্য এই চাপান–উতোরের মাঝেই পর্যাপ্ত টিকা না পাওয়ার কারণে মহারাষ্ট্রে শতাধিক টিকাকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উদ্বিগ্ন এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার টিকা সরবরাহ নিয়ে কথা বলেছেন হর্ষবর্ধনের সঙ্গে। গত বুধবার সকাল সাতটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৮৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬৮৫। মহারাষ্ট্রে নতুনভাবে সংক্রমিত হয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার। মারা গেছেন ৩২২ জন।

মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপে বুধবার বলেছিলেন, রাজ্যে মজুত টিকা রয়েছে দু–তিন দিনের। নতুন জোগান না এলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যাবে। বুধবার রাতেই রাজ্যের কিছু শহরে টিকাকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা এক শ পেরিয়ে যায়। এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে টুইট করে জানান, শুধু পুনে শহরেই শতাধিক টিকাকেন্দ্র বন্ধ।

বিজ্ঞাপন

এই অভাবের জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সরাসরি দায়ী করেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। কেন্দ্রের টিকা নীতি ‘বৈষম্যমূলক’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, মহারাষ্ট্রের মতো জনবহুল রাজ্যে (১২ কোটি) মাসে ১ কোটি ৬০ লাখ ডোজ প্রয়োজন। দেওয়া হচ্ছিল সপ্তাহে ৭ লাখ, সেটা বেড়ে হয়েছে ১৭ লাখ; অথচ দরকার ৪০ লাখ। গুজরাটের জনসংখ্যা মহারাষ্ট্রের অর্ধেক। তাদের দেওয়া হচ্ছে মাসে ১ কোটি টিকা!

বৈষম্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বাড়াবাড়ি রকমের সংক্রমণের জন্য রাজ্য সরকারকেই দোষারোপ করেছেন হর্ষবর্ধন। এক কড়া বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্র ও দিল্লির রেকর্ড খুব সাধারণ। এখন পর্যন্ত তারা মাত্র ৪১ শতাংশ ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসাকর্মীকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দিতে পেরেছে।

পাঞ্জাবের হাল আরও খারাপ। তারা টিকা দিয়েছে মাত্র ২৭ শতাংশকে। অথচ ১২টি রাজ্যে এই হার ৬০ শতাংশের বেশি। হর্ষবর্ধনের অভিযোগ, মহারাষ্ট্রের মতো বিরোধী রাজ্যগুলো নিজেদের ‘অপদার্থতা’ ঢাকতে কেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। এক বছর ধরে মহারাষ্ট্র সরকার কোভিড মোকাবিলায় দায়সারা গোছের কাজ করছে।

পাঞ্জাবের হাল আরও খারাপ। তারা টিকা দিয়েছে মাত্র ২৭ শতাংশকে। অথচ ১২টি রাজ্যে এই হার ৬০ শতাংশের বেশি। হর্ষবর্ধনের অভিযোগ, মহারাষ্ট্রের মতো বিরোধী রাজ্যগুলো নিজেদের ‘অপদার্থতা’ ঢাকতে কেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। এক বছর ধরে মহারাষ্ট্র সরকার কোভিড মোকাবিলায় দায়সারা গোছের কাজ করছে।

হর্ষবর্ধনের সমালোচনার কেন্দ্রে থাকা মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও পাঞ্জাবে সরকারে আসীন বিরোধীরা। তিনটি সরকারই ১৮ বছরের বেশি সবাইকে টিকা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। অথচ হর্ষবর্ধন বিষয়টিতে রাজনৈতিক রং লাগালেন। শিবসেনার মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এই মন্তব্য ‘দুর্ভাগ্যজনক’ জানিয়ে বলেন, ‘উনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অথচ কথা বলছেন দলীয় মুখপাত্রের মতো। বিরক্তিকর।’