লকডাউনে ব্যাংক লেনদেন চলবে দৈনিক আড়াই ঘন্টা।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩ বছরs পূর্বে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া লকডাউনের মধ্যে পরবর্তি সাত দিন দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলো সীমিত আকারে চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রিয় ব্যাংক। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, আগামীকাল ৫ এপ্রিল সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গ্রাহক লেনদেন করতে পারবেন। আর ব্যাংক খোলা থাকবে দুপুর ২টা পর্যন্ত।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা চালু রাখার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ৫ এপ্রিল হতে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত দৈনিক ব্যাংকিং লেনদেনের সময়সূচি সকাল ১০টা হতে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা এবং প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখতে পারবে।
আগামীকাল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত লেনদেন চলাকালীন সময়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখাসমূহে জরুরি ব্যাংকিং সেবা নির্বিঘ্নে রাখতে প্রয়োজনীয় জনবলের বিন্যাস ও উপস্থিতির বিষয়টি ব্যাংক স্বীয় বিবেচনায় সম্পন্ন করবে। এক্ষেত্রে জনস্বার্থে ব্যাংকিং সেবা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতি ও অফিসের কর্মপরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করতে বলা হয়েছে।
গ্রাহকদের হিসাবে সব প্রকার জমা ও উত্তোলন, ডিমান্ড ড্রাফট/পে-অর্ডার ইস্যু ও জমা গ্রহণ, ট্রেজারি চালান গ্রহণ, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের আওতায় ভাতা ও অনুদান বিতরণ, বৈদেশিক রেমিট্যান্সের অর্থ পরিশোধ, অভ্যন্তরীণ ও আন্ত:শাখা অর্থ স্থানান্তর, এনআরবি বন্ডে এবং বিভিন্ন প্রকার জাতীয় সঞ্চয় সার্টিফিকেটের মেয়াদপূর্তীতে নগদায়ন ও কুপনের অর্থ পরিশোধ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইউটিলিটি যেমন: গ্যাস,পানি, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিল গ্রহণসহ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক চালু রাখা বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেমের ক্লিয়ারিং ব্যবস্থার আওতাধীন অন্যান্য লেনদেন সুবিধা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
নগদ জমা ও উত্তোলনের জন্য অনলাইন সুবিধা আছে এমন ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের লেনদেনের সার্বিক সুবিধা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রিয় ব্যাংক। একইসঙ্গে সিটি কর্পোরেশন ও জেলা সদরে কার্যরত যে সব ব্যাংকের দুই কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক শাখা রয়েছে, সেক্ষেত্রে সুবিধাজনক একটি শাখা (অথরাইজড ডিলার শাখা ব্যতীত) হতে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার শর্তে অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে। তবে বন্ধ শাখার গ্রাহকদের সেবা প্রাপ্তি বিষয়ে জানাতে ওই শাখার দৃশ্যমান স্থানে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। অনলাইন সুবিধা বহির্ভূত ব্যাংকের অন্যান্য শাখা খোলা রাখতে হবে।
বিশেষ ব্যবস্থাধীনে ইতঃপূর্বে মঞ্জুরীকৃত এবং বিতরণের অপেক্ষায় থাকা ঋণের অর্থ ছাড়করণ, বিভিন্ন প্রণোদনাগুচ্ছের আওতাধীন কার্যক্রম, শ্রমঘন শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যাবতীয় ঋণ নিয়মাচার পরিপালনপূর্বক রপ্তানি বিল ক্রয়, ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ অব্যাহত রাখতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বৈদেশিক লেনদেন সম্পাদনের জন্য বৈদেশিক বাণিজ্য (অথরাইজড ডিলার) শাখাসমূহেও লেনদেন অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সমুদ্র/স্থল/বিমান বন্দর এলাকায় (পোর্ট ও কাস্টমস এলাকা) অবস্থিত ব্যাংকের শাখা/উপ-শাখা/বুথ সার্বক্ষণিক খোলা রাখার বিষয়ে আগস্ট ০৫, ২০১৯ এ জারিকৃত ডিওএস সার্কুলার লেটার নং-২৪ অনুসারে স্থানীয় প্রশাসনসহ বন্দও ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাক্রমে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিতপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন সময়সূচি ও কার্যক্রম বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক স্বীয় বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবে। এটিএম ও কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন চালু রাখার সুবিধার্থে এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত নোট সরবরাহসহ প্রযোজ্যক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা সার্বক্ষণিক চালু রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি এটিএম বুথগুলোতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্যাংকের সান্ধ্যকালীন এবং প্রযোজ্যক্ষেত্রে সাপ্তাহিক ছুটিকালীন ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।