সেনাসদস্যরা তুলে নিয়ে গেল মিয়ানমারের অসুস্থ তারকাকে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩ বছরs পূর্বে
মিয়ানমারের জনপ্রিয় তারকা পেইং তাখনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে মডেল, অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী হিসেবে বিনোদনজগৎ আর ভক্তদের কাছে পরিচিত নাম ২৩ বছরের এই তরুণ।
পেইং তাখন
ইনস্টাগ্রাম
পোষা প্রাণীকে কোলে নিয়েই সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে রাস্তায় প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন পেইং। মিছিল করেছেন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এমনকি মিয়ানমারের সেনাশাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তুলতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রামে তাঁর অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়া হয়।
পেইং তাখন
ইনস্টাগ্রাম
আর আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। আটটি ট্রাকভর্তি অন্তত ৫০ জন সেনাসদস্য তাঁকে নিয়ে যান বলে দাবি তাঁর বোন থি থি লুইনের।
পেইং তাখন
ইনস্টাগ্রাম
ফেসবুকে পেইংয়ের বড় বোন লুইন লেখেন, ‘আজ ভোর পাঁচটার দিকে আটটি ট্রাকভর্তি অন্তত ৫০ জন সেনাসদস্য এসে ওকে ধরে নিয়ে গেছে। আমার ভাই খুবই অসুস্থ। সে ঠিকমতো দাঁড়াতে বা হাঁটতেও পারছিল না। তারা সেই অবস্থায়ই তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গেছে।’ বোনের স্ট্যাটাসের সঙ্গে সহমত জানিয়ে ইয়াঙ্গুনের নর্থ ড্রাগন এলাকা থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরাও।
পেইং তাখনকে গ্রেপ্তারের ফলে আন্দোলন আরও বেগবান হয়েছে
ইনস্টাগ্রাম
বিজ্ঞাপন
কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেইং লেখেন, ‘আমরা সামরিক জান্তা চাই না। গণ–আন্দোলনে যাদের আটকে রাখা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়া হোক। আমরা ২০২০ সালের নির্বাচিত সরকার পুনর্বহাল চাই। বিশ্ব, আপনারা সামরিক শাসন, নির্যাতনে নয়, বরং মিয়ানমার আর গণতন্ত্রের পক্ষে থাকুন।’ এই স্ট্যাটাসের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেইংয়ের সব অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়া হয়।
পেইং তাখন
ইনস্টাগ্রাম
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই মিয়ানমারে আন্দোলন শুরু হয়। দ্রুত এই আন্দোলন পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলন এখন অনেকটাই ‘গণ-আন্দোলনে’ রূপ নিয়েছে। মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের দুই মাস পেরিয়ে গেছে। অং সান সু চির নির্বাচিত সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছে সামরিক জান্তা। কিন্তু মানছে না জনগণ।
পেইং তাখন
ইনস্টাগ্রাম
মিয়ানমারে এত মৃত্যু, এত রক্ত ঝরার পরও দেশটির বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কোনো ভয়ভীতি নেই; বরং তাঁরা প্রতিদিন দ্বিগুণ সাহস নিয়ে রাজপথে নামছেন। সেনাশাসনের বিরুদ্ধে তুমুল আওয়াজ তুলছেন। বুক চিতিয়ে দিচ্ছেন জান্তার বন্দুকের নলের সামনে। বুলেট দিয়ে গণতন্ত্রের দাবিকে স্তব্ধ করতে চাইছে দেশটির সামরিক জান্তা। কিন্তু দেশটির জনগণ স্পষ্টই মৃত্যুকে আর পরোয়া করছে না